কুররাতুল আইন রেহবার, ভারতের অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দা। গত শনিবার তিনি ঘুম থেকে উঠেই হতবাক হয়ে যান। দেখেন, ‘অনলাইন বিক্রির’ জন্য তাকে নিলামে তোলা হয়েছে। অনুমতি ছাড়াই তার ছবি নেওয়া হয়েছে। অনলাইন ‘বিক্রি হয়’ এমন একটি অ্যাপে আপলোড করা হয়েছে তার সেই ছবি।
কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরার খবরে বলা হয়েছে, এমন ঘটনার শিকার রেহবার একা নন। ভারতে শতাধিক নারীর ছবি আপলোড করা হয়েছে বিক্রির জন্য। এসব নারীর মধ্যে বলিউডের অভিনেত্রী শাবানা আজমিও রয়েছেন।
এ ছাড়া আরও রয়েছেন সাংবাদিক, অধিকারকর্মী ও রাজনীতিবিদ। যে অ্যাপের মাধ্যমে এই নিলাম হচ্ছে, তার নাম ‘বুল্লি বাই’।
ভারতে এমন ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগে গত বছরের জুলাইয়ে এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল। সেই সময় যে অ্যাপের মাধ্যমে এই বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল, তার নাম ‘সুল্লি ডিলস’। ওই অ্যাপের মাধ্যমে বিক্রির জন্য নাম উঠেছিল প্রায় ৮০ মুসলিম নারীর। এই ‘বুল্লি’ কিংবা ‘সুল্লি’—দুটি শব্দই ব্যবহার করা হয় নারীদের অপমান করার জন্য।
নতুন অ্যাপটি প্রসঙ্গে ভারতের ‘ফ্যাক্ট চেকের’ ওয়েবসাইট অল্টনিউজের সাংবাদিক মোহাম্মদ জুবায়ের বলেন, এবারের অ্যাপটিতে ইংরেজি ভাষার পাশাপাশি পাঞ্জাবি ভাষাও ব্যবহার করা হয়েছে।
এর আগে যখন ‘সুল্লি ডিলস’ অ্যাপটি থেকে নারীদের নিলাম করা হয়েছিল, তখনো সেই তালিকায় ছিলেন রেহবার। তিনি আল-জাজিরাকে বলেন, এবারও অ্যাপে ছবি দেখে হতবাক হয়েছেন তিনি।
রেহবার বলেন, ‘এটা খুবই অপমানজনক ও হতাশার। যখন অ্যাপে ছবি দেখলাম, তখন আমার গলা ভারী হয়ে আসে, আমার লোম খাড়া হয়ে যায় এবং আমি অসাড় হয়ে পড়ি।’
‘বুল্লি বাই’–এর মতো অ্যাপের মাধ্যমে আসলে আক্ষরিক অর্থে নারীদের বিক্রি করা হয় না। রেহবার বলেন, মুসলিম নারীদের অপমানের জন্য এটি ব্যবহার করা হয়।
গত শনিবার অ্যাপটি নামিয়ে নেওয়া হয়। ভারতের গণমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, মুম্বাইয়ের সাইবার পুলিশ এ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ‘সুল্লি ডিলস’ ক্লোন করে এটি তৈরি করা হয়েছে।